Tuesday, April 21, 2015

সনাতন ধর্ম ও পরিবেশ



সনাতন ধর্ম সব সময়ই পরিবেশ বান্ধব দর্শন অনুসারে চলে প্রকৃতপক্ষে বলা যায় যে সনাতন ধর্মের মতো প্রকৃতি সচেতন ধর্ম আর বিশ্বে নেই মহাভারত, রামায়ন, বেদ, উপনিষদ, ভগবদগীতা পুরাণসমূহে পরিবেশ সংরক্ষনের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে পৃথিবী প্রকৃতিকে কখনো শাসন করার কথা বলেনি এই ধর্ম বরং প্রকৃতি বিরূপ আচরন করলেও তা সহ্য করতে বলা হয়েছে এমন কিছু করতে নিষেধ করা হয়েছে যা প্রকৃতির বিরুদ্ধে যায়
বেদে বলা হয়েছেঃ
পুকুর, নদী, খাল, বনাঞ্চল এসব দুষিত বা ধ্বংস কোর না। ( যজুর্বেদঃ .২২)
বায়ুতে আমরা সচ্ছন্দে বেঁচে থাকি, একে দুষিত কোর না। ( যজুর্বেদঃ .২৩)
মাটি দূষণ কোর না। (যজুর্বেদঃ ১৩.৩৮)
আমরা সকলেই জানি বায়ু, জল, ভুমি, অগ্নি, আকাশ এই পাচটি উপাদান সনাতন পুজার অবিচ্ছেদ্য অংশ। বেদে এই পাচটি উপাদান নিয়ে অনেক মন্ত্র আছে।
ঋগ্বেদ .১০ মন্ত্রটি জলকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এই মন্ত্রটিতে জলের জীবন দানের ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে যা শুধু শারীরিক ভাবেই নয় আধ্যাত্মিক ভাবেও।
ঈশ উপনিষদে একটি মন্ত্রে বলা হয়েছেঃ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই পরমাত্মা ঈশ্বরের। তাই শুধুমাত্র তোমার যা প্রয়োজন এবং যা তোমার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাই ব্যাবহার করো। তার চেয়ে বেশি কিছু নিও না।
তাছাড়াও সনাতন ধর্মে বৃক্ষকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছে। পুরাণে বলা হয়েছে, ‘ তোমরা যদি একটি বৃক্ষ কর্তন কর তবে তার বিনিময়ে দশটি উদ্ভিদ রোপন করো।আমরা জানি, খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে তৎকালীন সম্রাট অশোক বন সংরক্ষনের বিশেষ ব্যাবস্থা নিয়েছিলেন শুধুমাত্র একটি দর্শনের উপর ভিত্তি করেই, তা হল সকল জীবের মধ্যে আত্মার উপস্থিতি। সকল জীবের মধ্যে আত্মার অবস্থান যা সনাতন ধর্মের একটি মুল দর্শন। যেটি আমাদের সকল জীবের প্রতি অহিংস হতে শিক্ষা দেয়।
সনাতন ধর্মে জীবনদায়ী নদীকে দেবী রূপে কল্পনা করা হয়। যেমন আমরা সকলেই মাতা গঙ্গার কথা জানি। সনাতন শাস্ত্রসমুহে এমন অনেক বর্ণনাই আছে যা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। তাই পরিবেশ রক্ষায় সনাতন দর্শনের বিকল্প কিছুই নেই।
আপনি যদি প্রকৃতই ধর্মপ্রাণ হন তবে পরিবেশ রক্ষা করুন, প্রকৃতিকে শ্রদ্ধা করুন। কারন প্রকৃতির মাঝেই মিশে আছেন স্বয়ং ঈশ্বর।

Like us: Alokito Manush 

<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>