হিন্দুরা প্রায়ই একটি বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্ক করে থাকে।
তা হল মূর্তিপূজা করা কি উচিত নাকি উচিত নয়? এই নিয়ে বিভিন্ন হিন্দু বিশেষজ্ঞ
তাদের বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে বিভিন্ন যুক্তি প্রদর্শন করেন। এই রকম প্রশ্নের
সম্মুখীন হয়েছিলেন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। কাহিনীটি নিচে বর্ণনা দেয়া হলঃ
শ্রীরামকৃষ্ণের
সাথে এক মাস্টারমশাইয়ের পরিচয় হয়েছিল। পরিচয়ের দ্বিতীয় দিনেই মাস্টারমশাই
ব্রাম্মসুলভ প্রশ্ন তুলেছিলেন; ঈশ্বরকে যেহেতু নিরাকার বলে বিশ্বাস করি তাই তাকে
সাকার মানি কেমন করে? শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন, ‘নিরাকারে
বিশ্বাস ভাল; কিন্তু সাকারও সত্য।’ মাস্টার বললেন, ‘তাও যদি হয়,
তবু মাটির প্রতিমা তো তিনি নন।’
শ্রীরামকৃষ্ণ বললেন, ‘মাটি কেন গো! চিন্ময়ী প্রতিমা।’
মাস্টারমশাই বললেনঃ আচ্ছা, যারা মাটির প্রতিমা পূজা করে তাদের তো বুঝিয়ে
দেয়া উচিত যে, মাটির প্রতিমা ঈশ্বর নয়, আর প্রতিমার সম্মুখে ঈশ্বরকে উদ্দেশ্য করে
পূজা করা উচিত।
শ্রীরামকৃষ্ণ
(বিরক্ত হয়ে) – তোমাদের কলকাতার লোকের ঐ এক। কেবল লেকচার দেয়া, আর
বুঝিয়ে দেয়া! আপনাকে কে বোঝায় তার ঠিক নাই! তার জগত তিনি বোঝাবেন। তিনি
অন্তর্যামী। যদি ঐ মাটির প্রতিমা পূজা করাতে কিছু ভুল হয়ে থাকে তিনি কি জানেন না – তাকেই ডাকা
হচ্ছে? তিনি ঐ পূজাতেই সন্তুষ্ট হন। তোমার ওর জন্য মাথা ব্যথা কেন? তুমি নিজের
যাতে জ্ঞান হয়, ভক্তি হয়, তার চেষ্টা কর।
সুতরাং উপরের ঘটনা
থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা ঈশ্বরকে যেভাবেই ডাকি ঈশ্বর আমাদের সেভাবেই সাড়া
দেন। নিরাকার ঈশ্বর বিশ্বাস ভাল কিন্তু সাকার বিশ্বাস করাতেও দোষ নেই। প্রতিমা
পুজার মাধ্যমে আমাদের ভক্তি ও বিশ্বাস শক্ত হয়। অর্থাৎ আপনি সাকার অথবা নিরাকার
কিভাবে ঈশ্বরকে ডাকবেন তা একান্ত আপনার ব্যাক্তিগত ইচ্ছা। আপনি যেভাবেই ঈশ্বরকে
ডাকুন ঈশ্বর আপনাকে সাড়া দিবেন। এটা নির্ভর করবে আপনার ভক্তি ও বিশ্বাসের উপর। তাই
এটা নিয়ে দ্বন্দ্বের কিছু নেই।
------
অর্জুন রুদ্র
Please like our page: www.facebook.com/Alokito.Manush.Knowledge
<<<<<<<<>>>>>>>>>
No comments:
Post a Comment