Tuesday, November 26, 2013

Bengali explanation of Gayatri Mantra



মহাগায়ত্রী মন্ত্র
*****************
গায়ত্রী ঋগ্বেদে উল্লিখিত একটি শ্লোক এই শ্লোকটি হিন্দু বিশ্বাসে পবিত্র দেবীরূপে কল্পিত দেবী গায়ত্রী ব্রহ্মার স্ত্রী চার বেদেরজননী
মহাগায়ত্রী মন্ত্রটি হল
ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি ধিয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ।।
মন্ত্রটির সরলার্থ হচ্ছে; “সর্বলোকের প্রকাশক সর্বব্যাপী সবিতা মণ্ডল জগৎ প্রসবকারী সেই পরম দেবতার বরেণ্য জ্ঞান শক্তি ধ্যান করি; যিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি প্রদান করেছেন

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ কৃত অনুবাদঃ
যা হতে বাহিরে ছড়ায়ে পড়িছে পৃথিবী আকাশ তারা ,
যা হতে আমার অন্তরে আসে বুদ্ধি চেতনা ধারা
তাঁরি পূজনীয় অসীম শক্তি ধ্যান করি আমি লইয়া ভক্তি"
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এই মন্ত্রে পদ্যে যে বঙ্গানুবাদ করেন সেটি হল,
তিমির-রূপিনী নিশাসবিতা-সুন্দর!
সে তিমিরে তোমার সৃজন,
বিমল উজল আলোসৌন্দর্য-আধার!
ফুল্ল-ঊষাঅপূর্ব-মিলন
কুসুমিতা বসুন্ধরা-
দ্যু-লোক আলোক-ভরা-
জনয়িতা-সবিতা-সবার!
বরণীয়-রমণীয় নিত্য জ্ঞানাধার! (সবিতা)
দেবী গায়ত্রীর তিন রূপ সকালে তিনি ব্রাহ্মী; রক্তবর্ণা অক্ষমালা-কমণ্ডলুধারিনী মধ্যাহ্নে বৈষ্ণবী; শঙ্খ, চক্র, গদা ধারণকারিনী সন্ধ্যায় শিবানী; বৃষারূঢ়া, শূল, পাশ নরকপাল ধারিনী এবং গলিত যৌবনা
শব্দ-কল্পদ্রুম অনুসারে, যজ্ঞকালে একবার ব্রহ্মার স্ত্রী সাবিত্রী একা যজ্ঞস্থলে আসতে অস্বীকৃত হলে, ব্রহ্মা ক্রুদ্ধ হয়ে অন্য নারীকে বিবাহ করে যজ্ঞ সমাপ্ত করার পরিকল্পনা করেন তাঁর ইচ্ছানুসারে পাত্রী খুঁজতে বের হয়ে এক আভীরকন্যাকে (গোয়ালিনী) পাত্রী মনোনীত করেন ইন্দ্র বিষ্ণুর অনুরোধে তাঁকে গন্ধর্ব মতে বিবাহ করেন ব্রহ্মা এই কন্যাই গায়ত্রী
গায়ত্রীর ধ্যানে আছে, তিনি সূর্যমণ্ডলের মধ্যস্থানে অবস্থানকারিনী, বিষ্ণু বা শিবরূপা, হংসস্থিতা বা গরুড়াসনা বা বৃষবাহনা তিনি একাধারে ব্রহ্মা, বিষ্ণু শিব হিন্দু বিধান অনুসারে, সকাল, দুপুর সন্ধ্যায় গায়ত্রী ধ্যান করতে হয় এবং এই মন্ত্র ধ্যান বা পাঠে মুক্তি প্রাপ্ত হয় বলে এর নামগায়ত্রী বেদজ্ঞ আচার্যের কাছে এই মন্ত্রে দীক্ষিত হলে তাঁর পূর্ণজন্ম হয় তিনি দ্বিজ নামে খ্যাত হন সেই কারণে দ্বিজ অর্থাৎ ব্রাহ্মণগণের উপাস্য বৈদিক গায়ত্রী মন্ত্রে আদলেই অন্যান্য দেবতার গায়ত্রী রচিত হয়েছে
                                           …………………….. লিপ্টন রায় …………………..

Like us on FB: Alokito Manush

<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>> 

Wednesday, November 13, 2013

গনেশ একদন্ত হলেন কিভাবে?



গনেশ একদন্ত হলেন কিভাবে?
           গজানন গণপতি যুদ্ধে তার একটি দন্ত হারিয়ে নাম ধরেছেন একদন্ত। এই যুদ্ধটা ঘটেছিল ক্ষত্রিয়কুলান্তক পরশুরামের সঙ্গে। ইনি বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার। হর-দুর্গার দর্শন মানসে একদিন তিনি কৈলাসে উপস্থিত। কিন্তু মহাদেব ও মহাদেবী তখন অন্তঃপুরে নিদ্রামগ্ন। দ্বাররক্ষক নিযুক্ত হয়েছেন গনেশ। তার উপর কঠোর আদেশ – বিনা অনুমতিতে কেউ যেন ভিতরে প্রবেশ না করে।
                       পরশুরাম দ্বারে এসেই দাবী জানান অন্তঃপুরে অনুপ্রবেশের। কিন্তু গনেশ দ্বার ছাড়েন না, বলেন – ‘আদেশ নেই’। কিন্তু কে শোনে কার নিশেধ? দুর্ধর্ষ ক্ষত্রিয় বীর গনেশকে অগ্রাহ্য করেই ভিতরে প্রবেশে উদ্যত। প্রথমে গনেশের সহিত এক প্রস্ত বচসা, তারপর ধস্তাধস্তি, পরিশেষে তুমুল যুদ্ধ। পরশুরাম প্রচণ্ড কুঠারাঘাতে তার একটি দন্ত ভেঙ্গে দেন। দন্ত ভগ্ন হওয়ায় গনেশ রুধিরাক্ত কলেবর। তথাপি, তিনি পিতৃমাতৃ-আদেশ প্রতিপালনে অবিচলিত। একদন্ত হয়েও তিনি কর্তব্য পালনে স্থির।
                    এদিকে দুই বীরের বাকবিতণ্ডা, রনহুঙ্কার ও ধস্তাধস্তিতে হর-পার্বতীর নিদ্রা ভঙ্গ হয়। দ্বারে এসে দেখেন একদিকে শিবশিষ্য ভার্গব, অন্যদিকে ভগ্নদন্ত গজানন-দুইের মধ্যে মহাকুরুক্ষেত্র। কুমার নিরপরাধ; সে উপযুক্ত কতব্য নিষ্ঠারই পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু ভার্গব শিষ্য হয়েও শিষ্যচিত আচরন করেননি। অসময়ে শ্রীগুরুর বিশ্রাম ভঙ্গের প্রচেষ্টা শিষ্যের কর্তব্য নহে। শিষ্য বলে শিব এ  অপরাধ ক্ষমা করতে পারেন, কিন্তু নিষ্পাপ বালকের এ হেন দুর্দশা জননীর কোমল প্রানে সইবে কেন? তিনি যথোচিত তিরস্কার করেন পরশুধারী  ভার্গবকে। দেখতে দেখতে দেবীর রণচণ্ডিকা মূর্তি ধারন। শানিত অসি ঝলমল করে ওঠে।  ভার্গব দেখেন – আর রক্ষা নাই। বড় কঠিন স্থানে তিনি আঘাত দিয়ে বসেছেন। এক্ষণে উপায়?
            উপায় একটা হলো। ভার্গব একান্ত চিত্তে শ্রীবিষ্ণুর ধ্যানপরায়ন। বৈকুণ্ঠপতি দুই কুল বাচাতে স্বয়ং উপনীত হন কৈলাসধামে। তবে স্বরূপে নয়  - ব্রাহ্মণ অতিথি বেশে। এর আগেও আমরা দেখেছি – দেবী ব্রাহ্মণকে বড় সমাদর করেন। ব্রাহ্মণ নানা প্রবোধ বাক্যে অতি সহজেই দেবীর ক্রোধের শান্তি করে দেন। এ যাত্রায় রক্ষা পেয়ে যান ভার্গব।

                          ------------- স্বামী নির্মলানন্দ (মূর্তিপুজা কি ও কেন?)


<<<<<<<<<>>>>>>>>>    

Sunday, November 3, 2013

কালকে গ্রাস করেন যিনি, তিনিই কালী

কালকে গ্রাস করেন যিনি, তিনিই কালীঃ
            কালকে গ্রাস করেন যিনি, তিনিই কালী। তাই ‘কালীতন্ত্রে’ উল্লেখ করা হয়েছে ‘কলনাৎ সর্বভুতানাং’, সব স্থাবর-জঙ্গমকে তিনি গ্রাস করেন। কিন্তু যিনি গ্রাস করেন তাকে পুজা করে হয় কেন? কেনই বা তার পায়ে আনত হওয়া? মুণ্ডমালা বিভূষিতা, মুক্তকেশী, চতুর্ভুজা, ঘোরা, এই দেবী আমাদের বাংলা সাধন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন। কথায় বলে যেখানেই বাঙালি সেখানেই মা কালী। শুরু করা যাক একটা কাহিনী দিয়ে। বাংলার লোককাহিনী ছরিয়ে আছে বাংলার আকাশে-বাতাসে। দেবী কেন শিবকে পায়ের তলায় ফেলে রেখেছেন? কাহিনীটি এরকম, একবার মহাঘোরা দেবী ধ্বংসের উন্মাদনায় মাতলেন, এই বিশ্বকে শ্মশানে পরিনত করতে করতে এগিয়ে যেতে থাকলেন দেবী, তার পথ রুদ্ধ করবে এমন সাধ্য কার! দেবকুল চিন্তিত হয়ে পড়লেন, এভাবে দেবী ধ্বংস করতে থাকলে সমস্ত বিশ্বে সৃষ্টি বলে কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। কিন্তু কে রক্ষা করবে সৃষ্টি? একমাত্র মহাদেবই এই বিপদ থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম। দেবকুল তারই শরনাপন্ন হলেন। শান্ত মহাদেবের ওষ্ঠের প্রান্তে ফুটে ওঠে মৃদু হাসির চিহ্ন। তিনি চললেন কালী সন্নিধানে। ধ্বংসলীলার তাণ্ডব করতে করতে এগিয়ে চলেছেন দেবী, হঠাৎ তার পা কার যেন অঙ্গ স্পর্শ করল! স্তব্ধ হল দেবীর পথ চলা। তাকিয়ে দেখলেন কিসের উপর পদবিস্তার করলেন তিনি। দেখামাত্রই স্তব্ধ হয়ে গেলেন। স্বয়ং শিব তার পদতলে শুয়ে আছেন। স্বামীর গায়ে পাদস্পর্শ করেছেন তিনি, লজ্জায় জিব কাটলেন কালী, ধ্বংসলীলাও স্তব্ধ হল! এ কাহিনী নিছকই লৌকিক কাহিনী। তবু শিবের শব হয়ে মায়ের পায়ে পড়ে থাকাকে নানাভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সাধকেরা। সাধক রামপ্রসাদ লিখেছেনঃ শিব নয় মায়ের পদতলে।/ ওটা মিথ্যা লোকে বলে!!/ দৈত্য বেটা ভূমে পড়ে,/ মা দাঁড়ায়ে তার উপরে,/ মায়ের পাদস্পর্শে দানবদেহ/ শিবরূপ হয় রনস্থলে!!
                সাধকের দৃষ্টিতে দৈত্য মায়ের স্পর্শে হয়েছেন শিব। অসুরশক্তি শান্ত সমাহিত হয়েছে, দেবী এই রুপান্তরে তুষ্টা। পরিতৃপ্ত! রামপ্রসাদের এই রচনায় আরেকটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষিত হয়, সেটি হল – ‘রণস্থল’। দেবী-কাহিনী ও রূপবর্ণনায় বারংবার একটি যুদ্ধের পরিবেশ টেনে আনা হয়েছে। মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত শ্রীশ্রীচণ্ডীতে দেবীর আগমন ও উৎপত্তি এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই। সুর আর অসুরের যুদ্ধে দেবী অসুর নিধনে তৎপরা। একটির পর একটি রূপ পরিবর্তন করে দক্ষকন্যা সতী হয়েছেন হিমালয়দুহিতা পার্বতী। পার্বতী দেবী দুর্গা বা মহিসাসুরমর্দিনীরূপে মহিষাসুরকে বধ করেছেন, তারপর দেবতাদের আহবানে শুম্ভ-নিশুম্ভ বধের জন্য নিজ দেহ থেকে সৃষ্টি করেছেন কৌশিকী দেবীর। দেবী কৌশিকীর ভ্রুকুট কুটিল ললাট ফলক থেকে নির্গত হয়েছেন পাশহস্তা কালী। দেবী ভয়ংকরী ‘হং’ এই মহাশব্দে চারিদিক নিনাদিত করে অসুর নিধনে তৎপরা! অর্থাৎ পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে দেবী পার্বতীই বিভিন্ন স্তরে বিবর্তিত হয়ে দেবী কালিকায় পর্যবসিত হয়েছেন! একই শক্তির ভিন্ন প্রকাশ ছাড়া এরা আর কিছুই নয়!
                        যে কোন দেবীর উৎপত্তির ইতিহাস খুজতে আমরা বৈদিক সাহিত্যের আশ্রয় গ্রহন করি। বেদে দেবী কালী অগ্নিশিখার অন্যতম একটি শিখা! মুন্ডক উপনিষদে যজ্ঞাগ্নি-বর্ণনায় যজ্ঞাগ্নির সাতটি জিহ্বার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, ‘কালী করালী চ মনোজবা চ/ সুলোহিতা যা চ সুধুম্রবর্ণা।/স্ফুলিঙ্গিনী বিশ্বরুচি চ দেবী/ লোলায়মানা ইতি সপ্ত জিহ্বা!!
                       এখানে কালী আহুতি গ্রহণকারী অগ্নিজিহ্বা মাত্র। দেবী কালিকার সঙ্গে কৃষ্ণবর্ণ, ঘোর অন্ধকার রাত্রির একটি অনুষঙ্গ সর্বদাই জড়িয়ে থাকে। দেবী সর্বদাই ভয়ংকরী! দেবীর সঙ্গে অন্ধকারের এই মেলামেশা অনেক পণ্ডিতকে বেদের প্রসিদ্ধ ‘রাত্রি সুক্ত’ দেবী ধারনার উৎপত্তিক্ষণ বলে মনে করিয়ে দেয়। শুক্ল যজুর্বেদে সমস্ত লোক আঁধারে ভরিয়ে দেয়, এমন শক্তিকে রাত্রি দেবী রূপে বন্দনা করা হয়েছে। অথর্ববেদে বিভিন্ন অমাবস্যার রাত্রি বিভিন্ন নামে চিহ্নিত হতে দেখি। যেমন, দৃষ্টচন্দ্রা অমাবস্যার নাম ‘সিনীবালী’, নষ্টচন্দ্রা অমাবস্যার নাম ‘কুহু’। দেবী পুরানে দেবীর স্তবে বলা হয়েছে, ‘সিনীবালী কুহুশ্চৈব রাকা চানুমতী তথা’ (১২৭/১৮৩) এখানে অমাবস্যার বিভিন্ন নাম দেবীরুপেই বন্দিত হয়েছে। চণ্ডীর মধ্যে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘কালরাত্রির্মহারাত্রি-র্মোহরাত্রিশ্চ দারুণা।’ এই কালরাত্রিকেই বহু পণ্ডিত দেবী কালীর উৎপত্তিস্থল বলে চিহ্নিত করেছেন।
              শশিভূষণ দাশগুপ্ত তার বিখ্যাত ‘ভারতের শক্তি সাধনা ও শাক্ত সাহিত্য’ গ্রন্থে বিভিন্ন বাংলা সাহিত্যে দেবী কালিকার উপস্থিতি নির্দেশ করেছেন। তার মতে, মহাকবি কালিদাসের সময়ে হয়ত দেবী কালিকার ধারনা পুষ্ট ছিল না, কিন্তু ‘কালিদাস’ নামটিতেই যে দেবীর উপস্থিতি রয়েছে। ‘কালিদাস’ নামটির অর্থ কি ‘কালীর দাস’? যদি তাই হয় তবে, শশিভূষণ দাসগুপ্তের মতে, কালিদাসের সময় অল্প হলেও দেবী কালিকা জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন। তার ‘কুমারসম্ভব’ রচনায় দেখি, দেবী কালী উপমারূপে ব্যবহৃত। কুমারসম্ভবে বলা হচ্ছে, মহাদেব চলেছেন বিবাহ করতে। বরযাত্রীদের মধ্যে যে মাতৃকাদের বর্ণনা আছে তাতে সকলের পিছনে ‘কপালাভরণা’ কালী ঠিক যেন গণ নীলমেঘের মধ্যে বলাকাগুচ্ছের মতো শোভা ধারন করেছেন। অর্থাৎ, কালিদাসের যুগে দেবী কালিকা অপ্রধান দেবীদের একজন ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনিই প্রধানা হয়ে উঠেছেন।
                   কালীপূজা আর দুর্গাপূজা, দুইই বাংলার জীবনে আনন্দের উৎসব। কিন্তু দুর্গাপূজা বলতে আমরা এক ব্যাপকতাকে বুঝি, এই পুজায় জনজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র যেন সমানভাবে অংশগ্রহন করে। এ কেবল যিনি পুজা করছেন তার পুজা নয়, এতে পারিপার্শ্বিক সমস্ত শ্রেণী উপস্থিত। এই ব্যাপকতা বছরে একবারের জন্য। কিন্তু দেবীরূপে কালী যেন ব্যাক্তিগত সাধনার অঙ্গ। কালীসাধক রূপে বাংলার বহু ব্যক্তিত্বই উল্লেখযোগ্য স্থান গ্রহন করেছেন, উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণের অগ্রদুত রাজা রামমোহন থেকে শ্রীরামকৃষ্ণ পর্যন্ত। পাঠক চমকে গেলেন নাকি? ব্রাম্মসমাজের প্রতিষ্ঠাতা রামমোহন রায় কালীর সাধক! রাজা রামমোহন রায়ের সাধন-ইতিহাস বলে তন্ত্রসাধক রূপে তিনি কালী উপাসনা করেছিলেন বৈকি! কিন্তু ব্রাহ্মসমাজের বিবর্তনের ধারা একটু ভিন্ন পথে নিয়ে গিয়েছে।
                    বেদ পুরাণ মহাকাব্যের আঙিনা পেরিয়ে আমরা আজ বর্তমান যুগে যে দেবীকে কালীরূপে পুজা করছি, সেই দেবী পুরাণে বর্ণিত দেবীর মতো ভয়ংকরী নন, আমরা তার মাতৃরুপ দিতে গিয়ে উগ্রতা অনেকটা কমিয়ে এনেছি, দেবী হয়েছেন শ্যামাকালী, রক্ষাকালী, দক্ষিণাকালী।
           এই সব রূপে দেবী ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণে সর্বদাই তৎপরা।
                                                         ------- পূর্বা সেনগুপ্ত (মূর্তিপুজা কি ও কেন)


<<<<<<<<>>>>>>>>