বিশ্ব পালনে ব্রহ্মার ভুমিকা কি?
আমরা সকলেই জানি একজন সন্তানের জনক হয়
তার পিতা। কিন্তু জন্মদান করেই কি তার সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? সন্তান পালন কি তার
দায়িত্ব নয়? ব্রহ্মা এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড এবং তার অন্তর্গত সকল প্রজাবর্গের জনক,
কিন্তু সৃষ্টি করেই তিনি দায়মুক্ত হতে পারেন না। সৃষ্টি রক্ষায়ও তাকে শ্রম স্বীকার
করতে হয়। বিশ্বের মঙ্গল চিন্তা করেই তিনি প্রজা সৃষ্টির পূর্বে প্রকাশ করেছেন
বেদের। বেদই ধর্মাধর্ম, পাপ-পুন্য, কর্তব্যাকর্তব্যের নিয়ামক। বেদই সংসারবৃক্ষের পত্রস্বরূপ।
এই বেদরুপি পত্রের শীতল ছায়াতলেই জগতে সবাই সুখী ও সমৃদ্ধশালী হতে পারে। আমরা
সকলেই জানি বেদের দুইটি বিভাগ রয়েছে। এগুলো হল জ্ঞানকাণ্ড ও কর্মকাণ্ড। কর্মকাণ্ডে
বিভবময় ও স্বর্গজনক যাগ যজ্ঞাদির নির্দেশ, সদনুষ্ঠানের প্রেরণা; জ্ঞানকাণ্ডে
আত্মতত্ত্বের অমৃতপম উপদেশ। ব্রহ্মার করস্থিত স্রুব বা হোমপাত্র বেদের কর্মকাণ্ডের
প্রতীক। গীতার তৃতীয় অধ্যায়ের দশম স্লোকে বলা হয়েছে – প্রজাপতি ব্রহ্মা যজ্ঞের সহিতই প্রজা সৃষ্টি করেছিলেন।
উদ্দেশ্য-প্রজাগনের প্রতিপালন ও সুখসমৃদ্ধি সাধন, কেন না যজ্ঞ ‘ইষ্টকামধুক’, যজ্ঞ মানুষের
সকল শুভকামনাই পূর্ণ করে। পক্ষান্তরে, ব্রহ্মার দক্ষিনাধঃ করস্থিত জপমালা এবং তদীয়
বাহন হংস বৈদিক জ্ঞানকাণ্ডের সুচনা দেয়। ‘অহং সঃ’ বা ‘হংস’ – এ মন্ত্রই
আত্মজ্ঞান – সাধনার মুল বীজ। ব্রহ্মার জপমালায় ঐ
মন্ত্রই অহর্নিশ জপিত।
ব্রহ্মার দুই ভার্যা -
সাবিত্রী ও সরস্বতী। ব্রহ্মার সৃষ্টি এবং পালনধর্ম তদীয় দুই সহধর্মিণীর মধ্যেও
পরিলক্ষিত। সাবিত্রী –
বিশ্বপ্রসবিনী, সৃষ্টিরুপা ; সরস্বতী – সর্ববিদ্যার
প্রকাশিকারুপে বিশ্বপালিনী, পালনরূপা।
===+++ ভীম
রুদ্র +++===
খুবই সুন্দর লেখা। এভাবেই লিখতে থাকুন।
ReplyDelete